শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৮ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
পার্বত্য চট্টগ্রামের সম্ভাবনাময় অর্থকরী ফসল কাসাভা। কালের খবর চবি এক্স স্টুডেন্টস ক্লাব ঢাকা এর সভাপতি ব্যারিস্টার ফারুকী এবং সাধারণ সম্পাদক জিএম ফারুক স্বপন নির্বাচিত। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল সম্পন্ন। কালের খবর সীতাকুণ্ড হবে বাংলাদেশের অন্যতম মডেল উপজেলা : আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরী। কালের খবর মাটিরাঙ্গার গুমতিতে মহান বিজয় দিবসে বিএনপির শোভাযাত্রা ও পুষ্পস্তবক অর্পণ। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় মহান বিজয় দিবসে বিএনপির শোভাযাত্রা ও পুষ্পস্তবক অর্পণ। কালের খবর মুরাদনগরে সামাজিক সংগঠনের শীতের কম্বল বিতরণ। কালের খবর বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে ‘স্বাধীনতা সোপানে’ শ্রদ্ধা নিবেদন। কালের খবর জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার প্রধান কার্যালয়ের শুভ উদ্বোধন। কালের খবর জুলাইয়ের শহীদ পরিবারদেরকে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে নবীউল্লা নবীর আর্থিক সহায়তা ও খাদ্য বিতরণ। কালের খবর
পররাষ্ট্র নীতি : চিরবন্ধু চিরশত্রু রাস্ট্র বলে কিছু নেই। কালের খবর

পররাষ্ট্র নীতি : চিরবন্ধু চিরশত্রু রাস্ট্র বলে কিছু নেই। কালের খবর

 

।। হাসিব হুদা, কালের খবর ।। 

সাইকোলজিতে একটা কথা আছে একটা মিথ্যা কথা যদি আপনি দশ বার বলেন, তাহলে সেটা সত্যের মত মনে হবে। আপনার অবচেতন মন সেটাকে সত্য বলে মেনেও নিবে। বর্তমান কালে মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা প্রত্যেকেই এই সত্য দ্বারা পরিচালিত। আমাদের ৭০ এর দশকের জেনারেশন থেকে শুরু করে বর্তমান প্রজন্মের যাদেরকে আমরা জেন- জি বলি প্রত্যেকেই মিডিয়া দ্বারা পরিচালিত। বাংলাদেশ-ভারত সহ সারা বিশ্বের মানুষ কোনভাবেই এর বাইরে নয়।এ নিয়ে একটি তত্ব আছে, যা গোয়েবলসিও তত্ত্ব নামে পরিচিত ।যাক এ নিয়ে আর কথা বাড়াচ্ছি না মূল কোথায় ফিরে আসি। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশদের সুপরিকল্পনায় দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে, স্যার রেডফ্লিকের নেতৃত্বে মন গড়া ম্যাপের মাধ্যমে জন্ম হয় ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি রাষ্ট্রের।(যা নিয়ে আছে অনেক বিতর্ক) আর আমরা বাংলাদেশীরা ছিলাম পূর্ব পাকিস্তানী। শুনতে খারাপ লাগলেও এটি নির্মম সত্য। ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ হওয়া পূর্ব বাংলা কোন কালেই ন্যায্যতার ভিত্তিতে সম্মান পায়নি, পাইনি স্বাধিকার । পাকিস্তান নামক রাষ্ট্র থেকে পাইনি তার ন্যায্য অধিকার।ফলশ্রুতিতে ১৯৭১ সালে চরম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা পাই আমাদের একটি ভূখণ্ড, একটি পতাকা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। যা অর্জনের পিছনে ছিল বাঙালি জাতির অনেক বড় আত্বত্যাগ। ৩০ লক্ষ শহীদের রক্ত চার লক্ষ মা বোনের ইজ্জত। গত ৫৩ বছরে আমাদের স্বাধীনতার পরে আমাদের মাথায়, মননে, মস্তিষ্কে, তাই চরমভাবে সেট হয়েছে পাকিস্তানের প্রতি তীব্র ঘৃণা, খুব সঙ্গত কারণে। মাথামোটা পাকিস্তানিরা, আমাদের স্বাধীনতার সময়ে যে হত্যা, গুম, খুন, গনহত্যা, ধর্ষণ, চালিয়েছে তা পৃথিবীতে বিরল না হলেও মোটামুটি আছে । হিরোশিমা নাগাসাকিতে আমেরিকা যখন বোমা ফেলে তার পরিনাম কি ভয়াবহ ছিল আমরা তা জানি। পাঠ্য বইয়ে পড়েছি সে ইতিহাস । ভিয়েতনাম যুদ্ধের কথা জানেনা,জানেন না আমরিকার অত্যাচারের কথা, এমন মানুষ পৃথিবীতে বিরল। কিন্তু আমরা এখন জানি , জাপানের পরম বন্ধু হচ্ছে আমেরিকা। ভিয়েতনামের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ হচ্ছে আমেরিকার। আচ্ছা ওদের অত্যাচার কি কম ছিল তাহলে ওরা কিভাবে বন্ধু হলো?আমি যদি বলি পুরোটাই মনস্তত্ত্ব এবং মিডিয়ার কারসাজি। আপনি একটু খটকা খাবেন। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য এটাই সত্যি কথা। এটাই বাস্তবতা। আজীবনের বন্ধু আজীবনের শত্রু বলে বর্তমান জিও পলিটিক্সে কোন শব্দ নেই। বরং যেটা আছে সেটা হলো দেশের স্বার্থ, নিজেদের ভালো থাকা।নিজ দেশের স্বার্থ রক্ষা করা। স্বাধীনতা উত্তর কাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ভারতীয় মিডিয়া এবং বাংলাদেশের মিডিয়া, ভারতকে বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে তৈরি করেছে। এই বয়ান তৈরি করে দিয়েছ মিডিয়া আর আমাদের দেশের কিছু অথা কথিত বুদ্ধিজীবি।ভারত আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র, ভারত আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র, এই কথা শুনতে শুনতে আমরা বড় হয়েছি, আমাদের সন্তানেরা বড় হচ্ছে। স্বাধীনতার সময় ভারত আমাদেরকে সাহায্য করেছে, না হলে আমরা স্বাধীনতা পেতাম না, এই কথা শুনিয়ে শুনিয়ে ঘুম পাড়ানো হয়েছে আমাদেরকে আর আমাদের সন্তানদেরকে। পাকিস্তানের লোক আমাদের কে অত্যাচার করেছে ইয়াহিয়া টিক্কা খান আমাদেরকে অত্যাচার করেছে এই কথা শুনিয়ে শুনিয়ে ভূতের মত ভয় পেয়ে বড় হচ্ছে আমাদের সন্তানেরা।ঘৃণা নিয়ে, বড় হচ্চে এবং হয়েছে পাকিস্তান তথা পাকিস্তানের জনগণের প্রতি । কিন্তু ৫৩ বছর পরে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে, এই প্রজন্ম কি চিন্তা করছে তা আমরা রাজনৈতিক দল কিংবা মিডিয়া কি ভেবেছে কখনো? কিংবা বলা যেতে পারে আমরা কি চিন্তা করতে দিচ্ছি? বাংলাদেশ ভারত পাকিস্তান দেশকে নিয়ে নতুন করে চিন্তার সময় এসেছে এখন। এই লিখাতে চিন্তার খোরাক দিচ্ছি, এই উপমহাদেশের জনগণ, তথা বাংলাদেশ ভারতের পাকিস্তানের জনগন, এক দেশের মানুষকে নিয়ে আরেক দেশের মানুষ কি চিন্তা করে, কিভাবে আমাদেরকে ট্রিট করে। এই চিন্তাগুলার গভীরে আমরা কখনো যেতে পারি না, আমাদের মিডিয়ার কারণে রাজনৈতিক নেতাদের কারনে।
প্রথমে আসি আমাদের সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী ভারতের ব্যাপারে।

ভারত আমাদের তিন পাশে ঘিরে আছে, ভারত চাইলে আমাদেরকে শেষ করে দিতে পারবে। এই জুজুর ভয় ভারতীয় মিডিয়া এবং বাংলাদেশী কিছু সুশীল সমাজ এমন ভাবে আমাদের মাথায় কিছু ভুল তথ্য ও তত্ব ঢুকিয়ে দিয়েছে যা থেকে আমরা ভিন্ন চিন্তা করতে পারিনা। বর্তমানের ভারত আসলে কি আমাদের বন্ধু? একটু গভীরভাবে চিন্তা করি বা বন্ধু রাষ্ট্র হওয়া কি সম্ভব?ভৌগলিকভাবে হিসাব করলে বাংলাদেশ ভারতের ৩০ ভাগের এক ভাগ। তার মানে আমি অনেক ছোট রাষ্ট্র। ছোটকে তো লালন পালন করে রাখা বড়দের দায়িত্ব। ভারত কি সেটা করছে?নাকি আমাদেরকে পদায়ত করে রাখার চেষ্টা করছে? চিন্তাটা আপনার আমার মাথায় একবার ও নেই।কারণ আমি বৃত্তের বাইরে চিন্তা করছি না। মধ্যপ্রাচ্যের মাঝে ১৯৪৮ সাল থেকে ইসরাইলের মত ছোট দেশ সারা পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণ করছে। এই কথা আমরা বুঝলেও, এটা আমার মাথার মধ্যে নেই সঠিক নেতৃত্ব পেলে বাংলা দেশ ও হতে পারে এমন শক্তিশালী রাষ্ট্র। ঠিকভাবে পরিচালিত হলে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ ও হতে পারে কোরিয়া তাইওয়ানের মত প্রভাবশালী রাষ্ট্র। আমরা ভৌগোলিকভাবে ছোট কিন্তু আমাদের রয়েছে বিশাল জনগোষ্ঠী। সরকারিভাবে ১৭-১৮ কোটি জনসংখ্যা বলা হলেও এ সংখ্যা কোনভাবে ২৫ এর কোটির কম নয়। কি অবাক হচ্ছেন এটাও মিডিয়ার কাজসাজি এবং গত সরকারের কারসাজি। পার কেপিটেল ইনকাম সহ কিছু ইন্ডিকেটর বেশি দেখানোর জন্য এটি গত ১৫ বছর ধরে কম দেখানো হয়েছে।বর্তমান বাজার অর্থনীতির যুগে জনসংখ্যা একটি বিরাট ফ্যাক্টর। যত বেশি মানুষ তত বড় বাজার। তারমানে এটা হচ্ছে ভারতের জন্য বিশাল এক বাজার। এই বাজারে তার যতটুকু প্রভাব থাকবে ততটুকু তার উন্নতির জন্য বাজার পাওয়ার জন্য সহায়ক হবে। তাই বাংলাদেশের মানুষ সুখে থাকুক বাংলাদেশ ভালো থাকুক এটা ভারতের কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না। আমাদের দেশ অস্থির থাকলে, আমাদের ভিতরে রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকলে, জনগণের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা গেলে পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ থাকবে ভারতের। টিকে থাকবে তার বাজার।আর তাতে এদেশে শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে না বৈদেশিক বিনিয়োগ আসবে না। আমাদের দেশ শান্তিতে থাকলে, সুস্থির থাকলে, গণতন্ত্র বিরাজ করলে, শিল্প কারখানা হবে আসবেবিদেশি বিনিয়োগ। শিল্প কারখানা গড়ে উঠলে, বিদেশি বিনিয়োগ বাড়লে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে বাংলাদেশ,কমে যাবে ভারতের উপর নির্ভরতা। ভারত হারাবে তার বিশাল বাজার ।২০২৩ চব্বিশ অর্থবছরে ভারতের সাথে আমাদের বাণিজ্য হয়েছিল ১২ বিলিয়ন ডলারের।যা দিন দিন বাড়ছে। ভারতীয় পর্যটন ব্যবসার ৩০% ঠিকেই আছে বাংলাদেশের এ উপরে। ভারত কি কোন ভাবে হারাতে চাইবে তার এই বাজার? এছাড়া গত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী হাসিনার আমলে ভারত যে অকল্পনীয় সুযোগ-সুবিধা পেয়েছে তা আমাদের চিন্তারও বাইরে।ভারত আমাদেরকে মনে করেছে তাদের অঙ্গরাজ্য । ২৪ এর গণ আন্দোলনে স্বৈরাচারী হাসিনা পলায়নের পরে ভারতের মাথায় বাজ পড়ে। ভারত কখনো আমাদের বন্ধু ছিল না স্বাধীনতার পর থেকে ছিল অনেকটা আমাদের প্রভুর মত। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পরে নতুন সরকার ভারত তোষণ নীতি বাদ দেয়ার ফলে ভারত কোন ভাবে মেনে নিতে পারছে না। তাই সবদিক থেকে চেষ্টা করছে আমাদেরকে চেপে ধরতে। তৈরি করে রাখতে চায় আমাদের দেশে অস্থিরতা । আর তাতে নগ্নভাবে সহযোগিতা করছে ভারতীয় মিডিয়া বা গদি মিডিয়া।ফেক্ট চেকের বদৌলতেএখন আমরা সবাই জানি ভারতের জনগণকে ক্ষেপিয়ে তোলার জন্য কি পরিমাণ গুজব ছড়াচ্ছে ভারতীয় মিডিয়া। উস্কে দিচ্ছে বাংলাদেশী জনগণ কে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার দিকে। আর বাংলাদেশের ভিতরের অস্থিরতা ধোঁয়া তোলে সাম্প্রদায়িকতার কথা বলে ফাইদা লুড়তে চাচ্ছে ভারতের সব রাজনৈতিক দল।
কিন্তু কি ভাবছে ভারতের জনগণ?
বিশেষ করে কলকাতা এবং ব্যাঙ্গালোরে যে অঞ্চল গুলিতে বাঙ্গালীদের যাতায়াত বেশি। চিকিৎসার সুবাদে তামিলনাড়ু বিশেষ করে চেন্নাই। পর্যটনের জন্য কলকাতা, দার্জিলিং, কাশ্মীর, ত্রিপুরা, আসাম, আরো কিছু অঞ্চলে পর্যটনের জন্য আমাদের দেশের মানুষ যায়। জাস্ট এই মুহূর্তে ওদের এই ব্যবসার অবস্থা কি? ওদের দেশের জনগণ কি চিন্তা করছে, সত্যিকারের খবরগুলো জানতে হলে ভারতীয় কিছু ইনফ্লুন্সিয়াল ইউটিউবারের কনটেন্ট এর উপরে চোখ রাখুন, দেখবেন ওরা কি রকম বিপদে আছে। এই নিয়ে তাদের রাষ্ট্র কিংবা রাজনীতিবিদদের কোন মাথা ব্যথা নেই। রাষ্ট্রীয় মিডিয়া এবং রাজনৈতিক দল সবাই তৈরি করছে নিজেদের স্বার্থে কিছু বয়ান যা সাধারণ জনগণ বিশ্বাস করতে বাধ্য হচ্ছে সত্যিকারের বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সঠিক তথ্য না জেনেই। আর এসবই সবই রাজনৈতিক দল গুলার ক্ষমতায় টিকে থাকার নগ্ন হাতিয়ার।জনগণের মধ্যে বিভাজন না থাকলে রাজনৈতিক দলগুলি কখনই নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে পারেনা। এটাই বাস্তবতা, এটাই পৃথিবীর চরম সত্য। তাই ভারতীয় এবং বাংলাদেশীদের মাঝে বিশেষ করে জনগণ টু জনগণ যে বিদ্বেষ ছড়ানো আছে সেটা পুরোটাই মিডিয়ার সৃষ্টি। গভীরভাবে চিন্তা করার ক্ষমতা সাধারণ জনগণ খুব বেশি অর্জন করে না। আর এই ফাইদা লুটে রাজনীতিবিদরা।এটাই ওদের ক্ষমতায় যাওয়ার মূল মন্ত্র, ডিভাইড অ্যান্ড রোল।এবার আসি পাকিস্তান প্রসঙ্গে। আমরা আমাদের নিজের গল্প শোনাতে পছন্দ করি। পছন্দ করি আমাদের দুঃখগুলোকে অন্যকে জানাতে। কিন্তু অন্য পক্ষ কি সমস্যায় আছে, কেমন আছে তা খুব কমই চিন্তা করি। প্রচলিত কথা আছে “অন্যের জুতা পায়ে দিয়ে তার কষ্টটাকে বুঝার চেষ্টা করুন “তাহলেই বুঝবেন সে কেন আপনার মতের বিপক্ষে গেল। ১৯৭১ আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ, আমাদের মরণ পন লড়াই, আমরা যখন পূর্ব পাকিস্তান তিল তিল নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছি, সেই সময় ও স্বৈরশাসকেরা পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণকে বুঝতে দেয়নি এদেশের প্রকৃত অবস্থা। স্বৈরশাসক পশ্চিম পাকিস্তানি জনগণদের কাছে বুঝাতে চেয়েছিল এটা নিছক মুজিবের ষড়যন্ত্র। শেখ মুজিব কে বানানো হয়েছিল একজন ভিলেন। একজন দেশদ্রোহী হিসাবে। সত্যি কথা বলতে কি স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা না জিতলে শেখ মুজিবের পরিণতি হত ঠিক রাজাকারদের মত। পাকিস্তানের সাধারণ জনগণ জানত,শেখ মুজিব একজন গাদ্দার।,আওয়ামী লীগ মানে গাদ্দারের দল। তাই পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণ, পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধিকার কিংবা স্বাধীনতা কোনটাই মেনে নেয়নি এবং ম্যাক্সিমাম লোক জানেই না পাকিস্তানিরা বাংলাদেশের উপরে কি পরিমাণ নিপীড়ন, নির্যাতন, গণহত্যা চালিয়ে ছিল। চালিয়েছিল ধর্ষণের মত জঘন্যতম কাজ। তাই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে এটা সাধারণ জনগণ কোনভাবে মেনে নেয়নি পশ্চিম পাকিস্তানের। বর্তমান পাকিস্তানের জনগণ এবং যুবসমাজ বা তরুণ-তরুণী বাংলাদেশকে মনে করে তাদের ভ্রাতৃ প্রতিম রাষ্ট্র। বাংলাদেশ ক্রিকেট খেলায় জিতলে ওরা আনন্দে নেচে ওঠে।পাকিস্তানি তরুণীদের পছন্দের পাত্রের তালিকায় বাংলাদেশী তরুণরা। কিন্তু আমরা বাংলাদেশিরা কি সেটা জানি? না জানি না। বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ তথাকথিত সুশীল সমাজ এই সত্যটা থেকে আমাদেরকে দূরে রেখেছে। স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তান অনেক মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছে। তার জন্য তাদের উচিত ছিল পরবর্তীতে যারা ক্ষমতায় এসেছে এর জন্য তাদের নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া। ভুল স্বীকার করা কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য এখানেও রয়েছে রাজনীতি। কোন ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাইলে সেই দলের ভোটের ব্যাংকে টান পড়বে, উল্টে যাবে তার গদি তাই কোন রাজনৈতিক দল এটা করবে না।
পাকিস্তানের বিভিন্ন সরকার বাংলাদেশের সাথে বন্ধু হতে চেয়েছে আমরা বাঙালিরা যেমন তাদেরকে দূরে সরিয়ে রেখেছি তেমনি ভারত কোনভাবে চাইনি তাদের স্বার্থে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে পুনরায় সুসম্পর্ক গড়ে উঠুক যেমন গড়ে উঠেছে জাপান আমেরিকা ভিয়েতনাম আমেরিকার মধ্যে। আমরা বাংলাদেশীরা ও পই পই মেনে নিচ্চি এই এই ব্যাপারটাকে। ভারতের সূক্ষ্ম উস্কানিতে এবং আমাদের রাজনৈতিক দলের ক্ষমতায় টিকে থাকার মূল মন্ত্রকে ।এটাও সত্যি কথা বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল গত ৫৩ বছর কোন না কোনভাবে ভারতকে তোষণ করেই চলেছে শুধুমাত্র ক্ষমতার লোভে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে। যদিও ভারত আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কাউকে কখনো বিশ্বাস করেনি। আর হাসিনার তাবেদারি/নতজানু পররাষ্ট্রনীতি,আর অবৈধ ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ভারতকে যা সবকিছু দিয়ে দেয়ার মানসিকতা, আমাদের দেশের রাষ্ট্রনীতি অর্থনীতি ধ্বংস করে দিয়েছে।ধ্বংস করে দিয়েছে আমাদের প্রতিটি রাজ্যের প্রতিষ্ঠান। ক্ষমতার লোভে স্বৈরাচারী হাসিনা ভুলে গেছে জনগণের কথা, জনগণের শক্তির কথা। ভারতের পদলেহন করে, দেখেছে শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার খোয়াব।তার মাথায় ছিল না সাধারণ জনগণ। সে জানতো না, সাধারণ জনগণ, যেকোনো সময় হয়ে উঠতে পারে অসাধারণ। আর সাধারণ যখন অসাধারণ হয়ে ওঠে তখন পৃথিবীর কোন শক্তি তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনা। কোন না কোনভাবে আসে স্বৈরাচারী সরকারের পতন। বৈষম্য বিরোধী কোটা আন্দোলন কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আন্দোলন এক সময় রূপ নেই তাই সরকার পতনের আন্দোলন। সফল হই জনগণ। যা এখন আমাদের দেশের চরম বাস্তবতা।আর এই মুহূর্তে ভারত আমাদের শত্রু প্রতীম হয়ে গেলে পাকিস্তানিরা ও তার নিজ স্বার্থে এগিয়ে দিয়েছে আমাদের দিকে আপাত দৃষ্টিতে বন্ধুত্বের হাত। আমরাও তা গ্রহণ করব নিশ্চিত মনে। কারণ ওই যে বন্ধু রাষ্ট্র বলে পৃথিবীতে কোন শব্দ নেই। সবই স্বার্থ। আমাদের এখন দরকার পিয়াজ রসুন তুলা সহ প্রয়োজনীয় দ্রব্য। প্রয়োজনে অস্ত্র গোলাবারুদ পাকিস্তান দিলে আমরা নিব এতে আমাদের দুটো লাভ।এক-ভারতের প্রতি আমাদের বাণিজ্য নিয়ে পরোটা কমে যাওয়া। ভারতের প্রতি বাণিজ্য ভারত মাঝে মাঝে সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে আমাদের দেশের তৈরি করে পন্যের সংকট। আরো পড়তে পারে অন্যের উপরে অতিরিক্ত শুল্কায়ন।পাকিস্তান চীন সহ নিত্য পণ্য আমরা অন্য দেশ থেকে আমদানি শুরু করলে ভারত তার একচেটিয়া বাণিজ্য প্রভাব কমাতে বাধ্য হবে।ভারত যেহেতু আমাদের ৩ পাশের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্র তার সাথে আমার যে কোন সময় হতে পারে শত্রুতা। পনেরো বছর আগে আমরা কখনো ভারত থেকে সামরিক অস্ত্র কিনতাম না সামরিক ট্রেনিংও নেয়া হত না বরং নেয়া হতো পাকিস্তান থেকে। কিন্তু বিগত সরকার হাস্যকর ভাবে শত্রুর সাথে মোকাবেলার জন্য ভারতের কাছ থেকে সামরিক সহযোগিতা নেয়া শুরু করে। যা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বটে। পাকিস্তান ও ভারতের মতো অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধ না হলেও পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র। পাকিস্তানের কাছ থেকে সামরিক সহায়তা পেলে ভারত চাপে থাকবে, শান্তিতে থাকবে আমার দেশ। শেষ কথা বলতে চাই, সবার উপরে চাই দেশ প্রেম, সততা ও জনগণের শক্তির প্রতি শ্রদ্ধা যা আমার দেশকে করে তুলবে সমৃদ্ধ এক বাংলাদেশ।

লেখক
হাসিব হুদা

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com